নাড়াজোল। পশ্চিম মেদিনীপুরের এক অনন্য জনপদ। এই জনপদটির অন্যান্য অনেক আকর্ষণ যেমন কাঁসাই ও শিলাবতী নদী, অপূর্ব স্থাপত্যের কয়েকটি মন্দির, শ্রী রামচন্দ্রের রথ ইত্যাদিকে ছাপিয়ে যে আকর্ষণে আমরা চারজনে সড়ক পথে ১৪২৫ বঙ্গাব্দের প্রথম ভোরে অর্থাৎ ১লা বৈশাখ সকালে নাড়াজোলের সুদীর্ঘ পথে পাড়ি দিয়েছিলাম সেটি হল নাড়াজোলের রাজবাড়িতে নিত্য পূজিত শ্রীদু্র্গা ও রামসীতার অপূ্র্ব স্থাপত্য ও মন্দিরকে সামনে রেখে এক অসাধারণ বর্ষবরণের আয়োজন। এই আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নববর্ষের বৈঠকি আড্ডা, যা আমরা নববর্ষের সকালে টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে সাধারণত দেখে থাকি। এতে থাকে গান, আবৃত্তি এবং মনোজ্ঞ আলোচনা, আর অবশ্যই একজন দক্ষ সঞ্চালক।প্রসঙ্গক্রমে বলি, এই আলোচনা থেকে আমরা বক্তাদের কাছ থেকে নববর্ষের তাৎপর্য, নববর্ষ পালনের বিশেষ কিছু দিক সম্বন্ধে জানতে পারি।
এই নাড়াজোল রাজবাড়ির বৈঠকি আড্ডায় সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সুলেখক ও সুবক্তা শ্রী দেবাশিষ ভট্টাচার্য। এই দায়িত্ব দেবাশিষ বাবু সাবলীল দক্ষতার সাথে পালন করলেন।
বৈঠকি আড্ডার পরেই শুরু হল আসল চমক। নববর্ষে সকলকে নিয়ে পংক্তিভোজ বা বলি আনন্দভোজ। সেই ভোজে যেমন সামিল হয়েছেন গ্রামের আমজনতা, তার মধ্যে রয়েছে কচি কাঁচা, কিশোর কিশোরী, প্রৌঢ়, প্রৌঢ়া, তেমনই সামিল হলেন বৈঠকি আড্ডায় যোগদানকারি বিদগ্ধ মানুষেরা, এবং আমরা অবশ্যই। সেই ভোজের মেনু হচ্ছে পান্তাভাত, সেদ্ধ ভাত, গরম খিচুড়ি, সিদ্ধ আলু মাখা, গরম উপাদেয় আলু পোস্ত, অনবদ্য বেগুন পোড়া। ভোজের সাথে সাথেই চলছে বাংলার কৃষ্ণলীলা কীর্তন, বাংলার টুসু, পটের গান ইত্যাদি।
স্থানীয়দের আন্তরিকতা এবং নাড়াজোলের ঐতিহ্যমন্ডিত পরিবেশে সুশিক্ষিত মানুষদের উপস্থিতি তে চিরন্তন বৈঠকি আড্ডা প্রত্যক্ষ করতে পেরে অভিভূত হয়েছি। ওই পান্তা ভাত, শাক, আলুভাতে, পোস্ত দিয়ে দুপুরের আহার। তার আগে আম পোড়ার সরবত, এবং সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কির্তন, পাশেই মন্দিরে দেবতার সেবা। এই নিখাদ সাবেকি পরিবেশ বিলুপ্তপ্রায়। একে নষ্ট হতে দেওয়া চলেনা। রাজবাড়ির ভগ্নপ্রায় স্মৃতি গুলি সংস্কার হোক, পর্যটনের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের উপার্জনের অনেক সুযোগ রয়েছে নাড়াজোল রাজবাড়ি তে।আবার যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা রইল।
এই আনন্দযজ্ঞ থেকে ফিরতে মন চাইছিল না। তবুও ঘরের টান বড় টান। অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। তাই ফেরার পথে আমাদের সকলের প্রাণে মনে অণুরণিত হচ্ছিল বিশ্বকবির অমোঘ দুটি লাইন।
জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ।
ধন্য হল, ধন্য হল মানবজীবন।
লেখা: প্রবীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়
চিত্রগ্রহন: শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়i
১লা বৈশাখ,১৪২৫
এই নাড়াজোল রাজবাড়ির বৈঠকি আড্ডায় সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সুলেখক ও সুবক্তা শ্রী দেবাশিষ ভট্টাচার্য। এই দায়িত্ব দেবাশিষ বাবু সাবলীল দক্ষতার সাথে পালন করলেন।
বৈঠকি আড্ডার পরেই শুরু হল আসল চমক। নববর্ষে সকলকে নিয়ে পংক্তিভোজ বা বলি আনন্দভোজ। সেই ভোজে যেমন সামিল হয়েছেন গ্রামের আমজনতা, তার মধ্যে রয়েছে কচি কাঁচা, কিশোর কিশোরী, প্রৌঢ়, প্রৌঢ়া, তেমনই সামিল হলেন বৈঠকি আড্ডায় যোগদানকারি বিদগ্ধ মানুষেরা, এবং আমরা অবশ্যই। সেই ভোজের মেনু হচ্ছে পান্তাভাত, সেদ্ধ ভাত, গরম খিচুড়ি, সিদ্ধ আলু মাখা, গরম উপাদেয় আলু পোস্ত, অনবদ্য বেগুন পোড়া। ভোজের সাথে সাথেই চলছে বাংলার কৃষ্ণলীলা কীর্তন, বাংলার টুসু, পটের গান ইত্যাদি।
স্থানীয়দের আন্তরিকতা এবং নাড়াজোলের ঐতিহ্যমন্ডিত পরিবেশে সুশিক্ষিত মানুষদের উপস্থিতি তে চিরন্তন বৈঠকি আড্ডা প্রত্যক্ষ করতে পেরে অভিভূত হয়েছি। ওই পান্তা ভাত, শাক, আলুভাতে, পোস্ত দিয়ে দুপুরের আহার। তার আগে আম পোড়ার সরবত, এবং সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কির্তন, পাশেই মন্দিরে দেবতার সেবা। এই নিখাদ সাবেকি পরিবেশ বিলুপ্তপ্রায়। একে নষ্ট হতে দেওয়া চলেনা। রাজবাড়ির ভগ্নপ্রায় স্মৃতি গুলি সংস্কার হোক, পর্যটনের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের উপার্জনের অনেক সুযোগ রয়েছে নাড়াজোল রাজবাড়ি তে।আবার যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা রইল।
এই আনন্দযজ্ঞ থেকে ফিরতে মন চাইছিল না। তবুও ঘরের টান বড় টান। অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। তাই ফেরার পথে আমাদের সকলের প্রাণে মনে অণুরণিত হচ্ছিল বিশ্বকবির অমোঘ দুটি লাইন।
জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ।
ধন্য হল, ধন্য হল মানবজীবন।
লেখা: প্রবীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়
চিত্রগ্রহন: শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়i
১লা বৈশাখ,১৪২৫





























Comments
Post a Comment